রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ, ১৪৩১
রূপালী ডেস্ক।।
প্রতিষ্ঠার ৫১ বছর পর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহিঃবিভাগে ৪টি নতুন ইউনিট চালু হয়েছে। বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে এসব ইউনিটের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম এবং মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মো. মনিরুজ্জামান।
এছাড়া আন্তঃবিভাগেও ৩টি ওয়ার্ড যথাক্রমে এন্ড্রোক্রাইনোলজি (ডায়াবেটিস), বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি এবং নিউরোসার্জারি ওয়ার্ড চালুর প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অপরদিকে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা সিটিস্ক্যান, চোখ পরীক্ষার লেসিক মেশিন ও এনজিওগ্রাম মেশিন চালু এবং নতুন একটি এমআরআই মেশিন আনার প্রক্রিয়াও শেষ পর্যায়ে। সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর থেকে সম্প্রতি আনা হয়েছে ৪টি অত্যাধুনিক আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন। সম্প্রতি ভারত সরকারের দেয়া একটি অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্সও পেয়েছে শেবাচিম।
হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি (মন্ত্রী পদ মর্যাদা) এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিভাগের সচিব বরিশালের গৌরনদীর কৃতি সন্তান লোকমান হোসেন মিয়ার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এই বহিঃবিভাগগুলো চালু করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম।
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে ১৯৭০ সালের ২০ নভেম্বর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার সময় থেকে এই হাসপাতাল থেকেই জেনারেল হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। ২০২০ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জেনারেল হাসপাতালের ১শ’ শয্যার কার্যক্রম শেবাচিম হাসপাতাল থেকে পৃথক করে শেবাচিম হাসপাতালকে ১ হাজার শয্যায় উন্নীত করে।
কিন্তু একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে সব ধরনের রোগ চিকিৎসার ইনডোর ও আউটডোর বিভাগ থাকার কথা থাকলেও শেবাচিমে চিকিৎসক ও স্থান সল্পতার কারণে একাধিক রোগের ইনডোর ও আউটডোর সেবা চালু ছিল না। বিশেষ করে কার্ডিওলজি (হৃদ রোগ) চিকিৎসার বহিঃবিভাগ চালু না থাকায় অসহায় দরিদ্র রোগীরা প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পরবর্তিতে বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়েন।
২০১৫ জানুয়ারি মাসে হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন কমিটির এক সভায় সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ এমপি জরুরি ভিত্তিতে শেবাচিমে হৃদরোগ বহিঃবিভাগ চালুর নির্দেশ দেন। এরপর ৭ বছর ফাইল বন্দি ছিল এর অগ্রগতি। বিগত ৪ জন পরিচালক তাদের কর্মকালে বিষয়টি উপেক্ষা করেছেন। সম্প্রতি নতুন পরিচালক যোগদানের পর স্বাস্থ্য সেবা কমিটির পুরনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। এর অংশ হিসেবে চালু হলে ৪টি বহিঃবিভাগ।
এর পাশাপাশি আন্তঃবিভাগে এন্ড্রোক্রাইনোলজি (ডায়াবেটিস), বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ও নিউরোসার্জারী বিভাগের কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নতুন চিকিৎসক যোগদান করেছেন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা সিটিস্ক্যান, লেসিক ও এনজিওগ্রাম মেশিন চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠার ৫১ বছর পর হাসপাতালে নতুন ৪টি বহিঃবিভাগ চালু করায় এর সুফল পাবেন দক্ষিণের হতদরিদ্র রোগীরা। তিনি এই হাসপাতাল থেকে রোগী অন্য হাসপাতালে রেফার্ড (প্রেরণ) শব্দটির বিলুপ্তি ঘটাতে চান। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শেবাচিমকে সব ধরনের রোগ চিকিৎসা ভরসাস্থল করার প্রত্যাশা করেন তিনি।